Bangalore : নিশুতি রাতে একাই ঘুরছিল নির্জন রাস্তায়, অটো ড্রাইভারের হাত ধরেই ফের বাড়ি ফিরল ঘর পালানো কিশোরী

অহেলিকা দও, কলকাতা : নারীদের ( girls) উপর অত্যাচার ( torture), ধর্ষণ ( rape) করে খুন ( murder) রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এতো খারাপ মানুষের মধ্যেও পৃথিবীতে ( world) ভালো মানুষেরও উপস্থিতি রয়েছে। বাবা-মায়ের ( parents) কাছে থেকেও পালিয়ে যাওয়া এক মেয়েকে উদ্ধার ( rescue) করেছেন ( Bangalore) এক অটো ড্রাইভার ( auto driver)। জেনে নিন কিভাবে তিনি এক সন্তানকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন ( Bangalore)।
অটো চালকের নাম কুমার কে ( kumar k)। তাঁর বয়স ৩৩ বছর। তিনি রাত ৯টার সময় ব্যাঙ্গালোরের ( Bangalore) নেলামঙ্গলা শহরে ধীরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন হঠাৎ করে একটি কিশোরী ছোট ব্যাকপ্যাক পতাকা দেখিয়ে কেএসআরটিসি বাস স্ট্যান্ডের ( KSRTC bus stand) কাছে তাঁর গাড়িটি থামায়। কুমার ভেবেছিল সেই কিশোরী হয়তো স্থানীয় অঞ্চলের বাসিন্দা টিউশন থেকে বাড়ি ফিরছে। অটো থামিয়ে কুমার জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে সে কোথায় যেতে চায়। কিশোরী উওর দিয়েছিল, “আমাকে আশেপাশের যে কোনও লজ বা হোটেলে নামিয়ে দিন যেখানে আমি রাতের জন্য থাকার ব্যবস্থা করতে পারি।” এই উওর শুনে কুমার খানের অবাক হয়েছিল।
কিছু ভুল বুঝতে পেরে কুমার তার বাবা মা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। উওরে কিশোরী বলেন, “আমি একজন অনাথ এবং আমার কাকা-কাকিমা আমার দেখাশোনা করছেন।” কিন্তু মেয়েটির কাছে তার কাকা-কাকিমা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করাতে তার কাছে কোন উওর ছিল না।
কিশোরীর বয়স ১১ বছর। শুক্রবার রাতে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তার বাবা সেইদিন কোডিগেহাল্লি থানায় ( Bangalore) অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কুমার এক সংবাদ সংস্থাকে বলেন, “আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। তখনই আমি আমার স্ত্রী পবিত্রাকে ফোন করে মেয়েটির সাথে কথা বলতে বলি। আমার স্ত্রী তাকে আমাদের বাড়িতে আসতে রাজি করায় এবং আমি তখনই তাকে আমার বাড়ি নিয়ে যাই। আমি একজন পুলিশ কনস্টেবল এবং দূরবর্তী আত্মীয় নরসিংহ মূর্তিকে ফোন করে ঘটনাটি ব্যাখ্যা করি। তিনি কিশোরীকে নিকটস্থ থানায় নিয়ে যেতে বলেন এবং সেখানে এই বিষয়টি রিপোর্ট করতে বলেছিলেন।”
কুমার থাকতেন আরাশিনাকুন্টে এবং নিকটতম থানা ছিল নেলামঙ্গলা গ্রামীণ ( Bangalore) তাও প্রায় প্রায় ২ কিমি দূরে। পুলিশ স্টেশনে যাওয়ার পর স্টেশনের কর্মীরা কিশোরীকে দেখে এবং তার গল্প শুনে কুমারকে প্রশ্ন করে, “আপনি কেন তাকে তখনই পুলিশ স্টেশনে না এনে বাড়িতে নিয়ে গেলেন কেন, আপনাকে কিভাবে বিশ্বাস করবো?” ততক্ষণে মূর্তি স্টেশনে ফোন করে সমস্তটা জানিয়ে দেয়। কর্মীরা পরবর্তীতে কুমারকে মেয়েটিকে বিচার বিভাগীয় থানায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
আরও পড়ুন….Bankura Murder : কাজের নামে বেড়িয়ে ফেরা হল না, পুকুর থেকে উদ্ধার ফুলে যাওয়া দেহ
রাত সাড়ে ১০টার সময় কুমার, তাঁর স্ত্রী পবিত্রা এবং কিশোরী থানায় ছিলেন। তখনও মহিলা পুলিশ কনস্টেবল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। তাকে জিজ্ঞেসা করায় সে বলে, “আমার বাবা মা নিয়মিত দেরি করে ঘুম থেকে উঠার জন্য আমার উপর চিৎকার করতো। এছাড়াও, তারা আমাকে ছোট ছোট জিনিসের জন্য বকা দিতো। তাই আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” পুলিশ তখন তার বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগ করেন। তার বাবা এবং মা পুলিশ স্টেশনে আসেন শনিবার দুপুর ২টোর সময়। তার বাবা এবং মা তাদের সন্তানকে পেয়ে খুশি হয় এবং কুমারকে ধন্যবাদ জানায়।
পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অনুপ শেঠি বলেছেন, সমস্ত মহিলা পুলিশ স্কুল ও কলেজে কাউন্সেলিং সেশন করবে এবং সেখানে ব্যাখ্যা করবে যে কীভাবে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া তরুণীদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, “একদিন একটি মেয়েকে একজন ট্রাভেল এজেন্ট শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছিল। তারপর আমরা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছি এবং এখন সে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে। কিন্তু আমাদের সমাজের সমস্ত তরুণ মেয়েদের পরামর্শ দেওয়া দরকার যে বাইরের পরিবেশ সাধারণত তাদের সাথে ঠিক কীভাবে আচরণ করতে পারে। কারণ প্রত্যেক মানুষ কুমার হয় না।”