মুখ ঢেকে রাখার বিতর্ক, হিজাব বোরখা সমস্যা মোকাবিলায় দেশগুলির লম্বা তালিকা

রাজকুমার মণ্ডল, কলকাতা  : কর্ণাটকে হিজাবের ( Hijab ban ) নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে এখনও। সারা বিশ্বে হিজাব নিয়ে বিতর্কের টানাপোড়েন চলছেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে কর্ণাটক হাইকোর্ট। বিশ্বজুড়ে বেশ কয়েকটি দেশের সদ্য নির্নয় করা আইনে মুখ ঢেকে রাখা বা হিজাব একটি অপরিহার্য ধর্মীয় অঙ্গ একদমই নয় বলে জানানো হয়েছে। অথচ কর্ণাটক হাইকোর্টের ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে। নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করে শিক্ষার্থীরা পুনরায় আদালতের সিদ্ধান্ত দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানায়। বিতর্কটিতে বিক্ষোভের আঁচ ছড়ানোয় হাইকোর্ট সাময়িকভাবে হিজাব( Hijab ban ) এবং জাফরান স্কার্ফ সহ সমস্ত ধর্মীয় পোশাক নিষিদ্ধ করে। আপাতত মুখ ঢেকে রাখার বিষয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। হিজাব, বোরখা, নেকাব। সারা বিশ্বে এগুলোর প্রচলন রয়েছে। হিজাব বিতর্কে কীভাবে দেশগুলি মোকাবিলা করেছে বা কোন দেশগুলি মুখ এবং মাথা ঢাকতে বাধা দিয়েছে?Hijab ban

তুরস্ক :‌ মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক তুরস্কের ১৯২৪ সালের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রবর্তক। যদিও আতাতুর্ক কখনোই হেডস্কার্ফ নিষিদ্ধ করেননি। তিনি সক্রিয়ভাবে জনসাধারনের মধ্যে হিজাবের ব্যবহারের প্রয়োজন নেই বলে জানান। তার প্রচেষ্টায় তুরস্কে হিজাব( Hijab ban )  ও বোরকা প্রায় উধাও হয়ে যায়। ২০১৩ সালে তুরস্ক সিভিল সার্ভিস মাথার স্কার্ফের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। তারপরের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।ফ্রান্স ‌: প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসাবে ‌ফ্রান্সই জনসমক্ষে বোরখা বা নেকাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আইনটি এপ্রিল ২০১১ থেকে কার্যকর। বৈষম্যের অভিযোগ প্রশমিত করার জন্য, আইনটি ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় ক্ষেত্রে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। স্কুলে যেকোনো ধরনের ধর্মীয় পোশাক পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।এই নিষেধাজ্ঞা ২ হাজার মুসলিম মহিলাকে প্রভাবিত করতে পারে বলে অনুমান। ৫০ লাখ মুসলিম জনসংখ্যায় অনেক সংখ্যক নারীই হিজাব পরা পছন্দ করে। ২০১৬ সালে, ইউরোপীয় জায়ান্ট আরও এক ধাপ এগিয়ে মহিলাদের সারা শরীরে সাঁতারের পোশাক বুরকিনি নিষিদ্ধ করে।সুইজারল্যান্ড :‌ সুইজারল্যান্ড ২০২১ সালে নেকাব নিষিদ্ধ করা ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে অন্যতম৷ সুইস নাগরিকরা রাস্তায়, দোকান এবং রেস্তোঁরাগুলিতে সম্পূর্ণরূপে তাদের মুখ ঢাকার বিপক্ষে।২০১৩ সালে সেপ্টেম্বরে টিকিনোর ইতালীয়-ভাষী অঞ্চলে জনসাধারণের মুখের হিজাব ( Hijab ban ) নিষিদ্ধ করার পক্ষে নিষেধাজ্ঞা জারী হয়। বোরখা “অস্বস্তিকর” বোধ করে বলে জানান সুইজারল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী ইভলিন উইডমার-শ্লাম্পফ।ডেনমার্ক :‌ পাবলিক প্লেসে মুখ ঢেকে রাখার উপর নিষেধাজ্ঞা ২০১৮ সালে বহাল রাখে ডেনমার্ক।পুনরাবৃত্ত অপরাধে জরিমানাও করতে পারে। আইনের শব্দে মুসলিম মহিলাদের বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়নি, তবে বলা হয় যে “যে কেউ এমন পোশাক পরেন যা জনসমক্ষে মুখ লুকিয়ে রাখে,তাহলে জরিমানা করা হবে”।বেলজিয়াম :‌ ২০১১ সালের জুলাইয়ে বেলজিয়ামে পুরো মুখের বোরখা নিষিদ্ধ করার একটি আইন কার্যকর হয়৷ এই আইনটি পার্ক এবং রাস্তার মতো জায়গায় পরিধানকারীর পরিচয়ে বাধার সৃষ্টি করে। এই পোশাক নিষিদ্ধ করা হয়৷ আইন ভঙ্গ করলে জরিমানা বা সাত দিনের জেল হতে পারে।

আরো পড়ুন‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌ রোহিতের তিন শক্তি সেলে বিদ্ধ শ্রীলঙ্কা, অধিনায়ত্বের প্রথম সিরিজেই হোয়াইটায়াশ

নেদারল্যান্ড, বুলগেরিয়া :‌ ওড়না দিয়ে ঢাকলে জরিমানা নেদারল্যান্ডে।এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র বোরখা এবং অন্যান্য বোরখার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়, পুরো মুখের হেলমেট এবং বালাক্লাভাও এর ক্ষেত্রেও।ইতালি :‌ জনসাধারণের শৃঙ্খলা রক্ষার লক্ষ্যে জনসমক্ষে মুখ ঢেকে রাখাকে বেআইনি বলে মনে করে আদালত। লোমবার্ডি এবং ভেনেটিয়া সহ হাসপাতাল এবং পাবলিক প্লেসে বোরকা এবং পুরো মুখের বোরখা নিষিদ্ধ করেছে৷অস্ট্রিয়া :‌ ক্ষমতাসীন জোট ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে আদালত এবং স্কুলের মতো পাবলিক স্পেসে পুরো মুখের নিকাব এবং বোরখা নিষিদ্ধ করে। বিরুদ্ধ আইন হিসাবে পরিচিত বোরখা। জনসাধারনকে চিবুক থেকে চুলের রেখা পর্যন্ত তাদের মুখের বৈশিষ্ট্যগুলি দেখাতে হবে। যদি দৃশ্যমান না হয়, তাহলে জরিমানা হবে।শ্রীলংকা ২০১৯ সালে ইস্টার সানডে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২৬০ জনেরও বেশি লোক নিহত হওয়ার পর বোরকা পরা সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।রাশিয়ার স্টাভ্রোপল অঞ্চলে হিজাবের ( Hijab ban ) উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। রাশিয়ান ফেডারেশনের একটি অঞ্চলে রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট এই রায় বহাল রাখে।যুক্তরাজ্য ইউনাইটেড কিংডমে ইসলামিক পোষাকের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে ২০০৭ সালের নির্দেশের পরে স্কুলগুলিকে তাদের নিজস্ব পোষাক কোড নির্ধারণ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।




Leave a Reply

Back to top button