জ্বলে পুড়ে ছাই! এই এপ্রিলে ১২২ বছরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কাটিয়েছে বাঙালি

দহনদশায় প্রলেপ দিয়ে গতকালই বৃষ্টিতে ভিজল গোটা রাজ্য। কালবৈশাখীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকা বাঙালি অবশেষে বাঁচল হাঁফ ছেড়ে। এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই উত্তরোত্তর বাড়ছিল সূর্যের তেজ। এই অবস্থায় সাধারণের আত্মারাম খাঁচা ছাড়া পরিস্থিতি। ছিল না বৃষ্টির নাম-গন্ধও। এমতাবস্থায়, গতকাল কালবৈশাখীর আগমন যেন একটু শান্তির ছোঁয়া দিল মানুষকে।
বিগত কয়েকবছরে বদলেছে প্রকৃতির রূপ। আগের তুলনায় বেড়েছে ঘূর্ণিঝড়ের পরিমাণ, বেড়েছে গরমের তেজ। আর এই পরিস্থিতি শুধুই বঙ্গে নয়। গোটা দেশ জুড়েই এই কয়েকদিন দেখা গিয়েছে গনগনে পরিস্থিতি। সূর্যের তেজে যেন ফেটে পড়েছে ধরিত্রী। এদিন হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত ১২২ বছরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেখা গিয়েছে এই বছর। ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও মধ্য রাজ্যগুলিতেই চলেছে এই দহন-দশা।
প্রসঙ্গত, আধুনিকতার ছোঁয়া মানুষকে যতটা সামনের দিকে এগিয়ে দিয়েছে, ঠিক ততটাই মানুষকে প্রকৃতির থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। গাছ কাটা থেকে শুরু করে অতিমাত্রায় দূষণ শেষ করে দিচ্ছে এই পৃথিবীকে। যার ফলাফল হাতে-নাতেই মিলেও যাচ্ছে। অতিমাত্রায় ঘূর্ণিঝড়, তাপপ্রবাহ, নতুন রোগের আমদানী মানুষের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে প্রকৃতির প্রতি প্রত্যেকটা অযত্নকে।
আবহবিদরা জানিয়েছেন, এপ্রিল মাসের দিকে ভারতের উত্তর-পশ্চিমের রাজ্যগুলির স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। সেই অনুপাতের দিক থেকে দেখতে গেলে এই বছর তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে স্বাভাবিকতার গন্ডি। প্রত্যেক বছর ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে পেতে এই বছর এপ্রিল মাসের স্বাভাবিক তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। যা বিগত ১২২ বছর সর্বোচ্চ। এর আগে মানুষ প্রকৃতির এহেন রূপ দেখেছিল ১৯০০ সালে।
আরও পড়ুন……ছবির দৃশ্য ঘুম কাড়বে আপনার! রইল ভারতীয় চলচিত্রের তাক লাগানো ছবির তালিকা
আরও পড়ুন……প্রধান শিক্ষক ও পিওনের মাঝে ধুন্ধুমার, লাঠি উঁচিয়েই চলছে মারপিট, ভিডিও দেখে অট্টহাসি নেটপাড়ায়
এই অতিরিক্ত গরমের প্রভাব থেকে বিরত থাকছে না বৃষ্টিপাতও। বিগত কয়েকবছরে হু হু করে তাপের পারদ চড়ার জেরে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বৃষ্টিপাত। আগের তুলনায় কমেছে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের প্রভাব। বেড়েছে ঘূর্ণিঝড় ও ভয়াবহ নিম্নচাপ। আবহবিদ মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্রের মতে, “বাড়ন্ত গরমের প্রভাবে আগের তুলনায় কমেছে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। যার জেরে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ভারতের কৃষি ব্যবস্থা। বিগত কয়েকবছরে ভারতে উত্তর-পশ্চিমের রাজ্যগুলিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮৯ শতাংশ ঘাটতি হয়েছে।” তাঁর সংযোজন, “আগামী কয়েকবছরে ভারতের উত্তর –পশ্চিমের রাজ্যগুলিতে আরও বাড়তে চলেছে তাপপ্রবাহের পরিমাণ। যা আদতেই ক্ষতিকর।”