Karnataka Hijab Controversy : হিজাব বিতর্কে আজ চূড়ান্ত রায়দান কর্ণাটক হাইকোর্টের, জমায়েতে জারি নিষেধাজ্ঞা

এক মাস আগেই হিজাব বিতর্কে (karnataka Hijab Controversy) তোলপাড় হয়েছে কর্নাটক। আজ এই মামলার রায় শোনাবে কর্নাটক হাইকোর্ট। তার আঁচ (karnataka Hijab Controversy) দেশ ছা়ড়িয়ে বিদেশেও পড়েছে। এমনকি কর্নাটক ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে হিজাব বিতর্ককে (karnataka Hijab Controversy) কেন্দ্র করে বিভিন্ন অশান্তির ছবি দেখা গিয়েছে। দফায় দফায় অশান্ত হয়ে ওঠে কর্নাটক। হিজাব পরিহিত কিছু ছাত্রীর আবেদনে মামলা হাইকোর্টের দরজা অবধি পৌঁছোয়। এই মামলা আপাতত কর্নাটক হাইকোর্টে বিচারাধীন। আজ এই মামলার রায় (Hijab Row Verdict) শোনাবে কর্নাটক হাইকোর্ট।
এর মধ্যে আদালতের রায়ের (Hijab Row Verdict) পর কোনওরকম অশান্তি এড়াতে প্রশাসনের তরফে কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে কোনও রকমের জমায়েত এবং বিক্ষোভে ২১ মার্চ অবধি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার বলেছেন, “বেঙ্গালুরুতে ১৫ মার্চ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য জনসাধারণের জায়গায় সব ধরনের জমায়েত, আন্দোলন, বিক্ষোভ বা উদযাপন নিষিদ্ধ।” জেলাশাসক কুমার রাও এম জানিয়েছেন যে উদুপি জেলার সমস্ত স্কুল এবং কলেজ মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে। এই উদুপি জেলা থেকেই প্রথম হিজাব বিতর্কের সূত্রপাত। শিবামোগ্গাতেও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এই জেলার এসপি বিএম লক্ষ্মী প্রসাদ জানিয়েছেন যে, ২১ মার্চ অবধি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, “৮ কোম্পানি কেএসআরপি, ৬ কোম্পানি জেলা সশস্ত্র বাহিনী এবং এক কোম্পানি ব়্যাফ মোতায়েন করা হয়েছে।”
দক্ষিণ কন্নঢ়ের ডিসি (Dakshina Kannada DC) আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। স্কুল-কলেজে সশীরের হাজির হয়ে আজ যে পরীক্ষাগুলি দেওয়ার কথা ছিল পড়ুয়াদের, সেই পরীক্ষাগুলি স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে অনলাইনে যে পরীক্ষাগুলি হওয়ার কথা ছিল, সেই পরীক্ষাগুলি আজ হচ্ছে।
কর্নাটক হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে এই মামলা (Hijab Row Verdict) শুনেছেন। এই বেঞ্চে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি ঋতু রাজ অশ্বস্থী, বিচারপতি কৃষ্ণা দিক্ষিত এবং বিচারপতি জেএম কাজ়ি। এর আগে কর্নাটক হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছিল, এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া অবধি এমন কোনও পোশাক পরে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া যাবে না যা বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে। কোনওরকম ধর্মীয় পোশাকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় আদালতের তরফে। প্রসঙ্গত হিজাব বিতর্ক (karnataka Hijab Controversy) নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে কর্নাটক। ঘটনার সূত্রপাত হয় উদুপি জেলা থেকে। যেখানে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। তারপরই একে একে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান একই পথে হাঁটে। বিতর্কের (karnataka Hijab Controversy) আঁচ বাড়তে থাকে। কিছুদিনের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই।
এর আগে অন্তর্বর্তী নির্দেশে কর্ণাটক হাইকোর্ট জানায়, চূড়ান্ত রায় (Hijab Row Verdict) না দেওয়া পর্যন্ত কোনও পড়ুয়াই ধর্মীয় পোশাক পরে স্কুল-কলেজে যেতে পারবেন না। কিন্তু তারপরেও এ বিষয়ে বিতর্ক থামছে না। আদালতে মুসলিম ছাত্রীদের আইনজীবী দাবি করেন, হিজাব ধর্মীয় বিশ্বাসের বিষয়। হিজাব পরা তাঁদের মৌলিক অধিকার। তাই হিজাব পরেই স্কুল-কলেজে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত। তিনি শিক্ষা সংক্রান্ত বিধিনিয়মের ১১ নম্বর ধারা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ওই বিধিনিয়মে বলা হয়েছে, ইউনিফর্ম বদলের এক বছর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে নোটিস দিতে হবে অভিভাবকদের। নিয়ম বলছে, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিফর্ম বদল করতে চাইলে অভিভাবকদের এক বছর আগে নোটিশ দিতে হয়। হিজাব নিষিদ্ধ করতে হলে এক বছর আগে জানানো দরকার।
আজ কর্ণাটক হাইকোর্ট এই মামলার রায় দেওয়ার পর মামলাটি সুপ্রিম কোর্টেও গড়াতে পারে। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে কর্ণাটক হাইকোর্ট চূড়ান্ত রায় না দেওয়া পর্যন্ত শুনানি হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এহেন নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সরব হন কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাঁরা পিটিশন দাখিল করে আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁরা দাবি করেন হিজাব পরা তাঁদের অধিকারের মধ্যে পড়ে। তাঁদের সেই অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফে। অবশেষে আগামিকাল অন্তিম রায় শোনাতে চলেছে কর্নাটক হাইকোর্ট। আদালত কী রায় দেয় তা আগামিকালি জানা যাবে। তবে কোনওরকম অশান্তি এড়াতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
আরও পড়ুন “হিজাব পরা অপরিহার্য, ধর্মীয় অনুশীলন নয়” বিতর্কের সমাপ্তি ঘটিয়ে সাফ বক্তব্য কর্নাটক হাইকোর্টের
আরও পড়ুন রোহিতের তিন শক্তি সেলে বিদ্ধ শ্রীলঙ্কা, অধিনায়ত্বের প্রথম সিরিজেই হোয়াইটায়াশ