একবছরে ২৩ পড়ুয়ার আত্মহত্যা! তবু কোটায় পড়ুয়ার ঢল, পিছনে লুকিয়ে কোন রহস্য?

ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশের জন্য সারা দেশ থেকে ছাত্রছাত্রীরা আসে রাজস্থানের কোটায়। শুরু হয় পড়াশোনা। শুরু হয় চাপ।

একবছরে ২৩ পড়ুয়ার আত্মহত্যা! কারণ পড়াশোনার চাপ। রীতিমতো চমকে দেওয়া পরিসংখ্যান। প্রতি বছর এমনটা চলতেই থাকে। ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশের জন্য সারা দেশ থেকে ছাত্রছাত্রীরা আসে রাজস্থানের কোটায়। শুরু হয় পড়াশোনা। শুরু হয় চাপ। অনেকেই সেই চাপ সহ্য করতে পারেন না। পরিণতি, আত্মহত্যা।

রাজস্থানের ছোট্ট শহর কোটার অলিগলিতে কোচিং ইনস্টিটিউট। ভালো শিক্ষকের মেলা। পড়ুয়া, অভিভাবকরা যেন হাতে চাঁদ পান। মাধ্যমিক পাশ করেই চলে আসেন এখানে। উচ্চমাধ্যমিকের পড়াশোনার পাশাপাশি চলতে থাকে ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি। পড়াশোনার চাপ, মা-বাবার প্রত্যাশার চাপ নিয়ে শুরু হয় এক অন্য জীবন।

Rajasthan,Kota,Admission,Suicide,Students

সবাই এই চাপ নিতে পারেন না। কেউ হস্টেলের ছাদ থেকে ঝাঁপ মেরে দেন, কেউ গলায় দড়ি দিয়ে শেষ করে দেন জীবন। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে ১৫ জন পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছিলেন কোটাতে। ২০১৯ সালে ১৮ জন পড়ুয়া নিজের জীবন শেষ করে দেন। ২০১৮ সালে ২০ জন, ২০১৬ সালে ১৭ জন, ২০১৫ সালে ১৮ জন এবং ২০২৩ সালে ২৩ জন পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছেন। ২০২০-২১ সালে কোভিডের জেরে বন্ধ ছিল কোটার ক্লাস। সেই বছর কোনও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি।

এত কিছুর পরেও কোটার আকর্ষণ কমেনি। আত্মহত্যার সংখ্যা কেবলই সংখ্যামাত্র। অভিভাবকদের মনে তা কোনও অভিঘাত সৃষ্টি করতে পারেনি। ছাত্র ভর্তি কমেনি এক চুলও। প্রতিদিন বাড়ছে কোটার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ছাত্র। বর্তমানে কোটায় ৩ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মা-বাবারা একরাশ চিন্তা নিয়েও সন্তানকে পড়তে পাঠাচ্ছেন। প্রবেশিকা পরীক্ষায় লক্ষ্যভেদের কৌশল যে এখানেই শেখা যায়।

পড়ুয়ারা বলছেন, প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রশ্নপত্র অন্য রকমের হয়। স্কুলের সিলেবাসে বা শুধু স্কুলে পড়ে সে সবের নাগাল পাওয়া মুশকিল। তাই বাধ্য হয়েই কোটায় আসা। তবে শুধু পড়াশোনা বা অভিভাবকের প্রত্যাশার চাপ নয়, আর্থিক চাপও থাকে। অনেক লোন নিয়ে পড়তে আসেন। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট, ভালো কলেজ, ভালো চাকরি – এই ফরমুলা মেনেই লোন শোধ হবে। একটু এদিক ওদিক হলে, আত্মহত্যা।

 




Leave a Reply

Back to top button