Mahatma Gandhi Death Anniversary : ভারত বিভাগের নেপথ্যে কী গান্ধীজি, ফিরে দেখা দুর্লভ ইতিহাস

দেশভাগ ভারতের ইতিহাসের একটি বড় অধ্যায়। যার মধ্যে রয়েছে কিছু মানুষের রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণের আনন্দ ও একটা বড় শ্রেণীর দেশান্তরী হয়ে ওঠার বেদনা। মহাত্মাজির ( Mahatma Gandhi Death Anniversary ) মৃত্যুর ৭৪ বছর কেটে গেলেও কিছু বিষয়ের উপর থেকে এখনও কাটেনি ধোঁয়াশা। দেশভাগের কথা উঠলেই এখনও বহু মানুষ অভিযোগের আঙুল তোলে মহাত্মা গান্ধীজির দিকে। কিন্তু ইতিহাস ঘেঁটে দেখে না কেউই।

ভারত তখন পরাধীন। জিন্না-ঘোষিত ডিরেক্ট অ্যাকশন ডে অতিক্রান্ত। সাম্প্রদায়িকতার বিদ্বেষবহ্নিতে জ্বলছে ভারত, বিশেষ করে পাঞ্জাব, কাশ্মীর, বাংলা, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের কিছু অংশ। এমতাবস্থায় আহমেদাবাদের সবরমতী আশ্রমে বেশ কয়েকদিনের জন্য আশ্রয় নিয়েছিলেন গান্ধীজি। দেশের নেতারা দিশেহারা। সাম্প্রদায়িকতার ( Mahatma Gandhi Death Anniversary ) আগুনের আঁচে হিংস্র পশুতে পরিণত হয়েছে একটা বড় অংশের মানুষ। হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা চারিদিকে।

Mahatma Gandhi Death Anniversaryহটাৎই বেজে ওঠে টেলিফোন। তৎকালীন সময়ে মহাত্মা গান্ধীর ( Mahatma Gandhi Death Anniversary ) সঙ্গে সুদূর শান্তিনিকেতন থেকে দেখা করতে এসেছিলেন অনিলকুমার চন্দ, এককালের গৃহনির্মাণ ও সরবরাহ দফতরের উপমন্ত্রী। নিজের আমলে ভারতবিখ্যাত। তাঁর সঙ্গে বেশ সুসম্পর্ক ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। তাঁর জীবনের এক গহীন কোণ থেকে তুলে ধরা এই তথ্য। যথারীতি একই ঘরে মহাত্মা গান্ধীজির সঙ্গে বিশেষ দরকারি কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন অনিল চন্দ। এই মুহূর্তে হটাৎই বেজে ওঠে টেলিফোন। গান্ধীজি ( Mahatma Gandhi Death Anniversary )  শায়িত অবস্থায় থাকায়, অনিল চন্দ রিসিভারটা তুলে শুনলেন। রিসিভারটি তোলা মাত্রই কানে এলো পন্ডিত জওহারলাল নেহেরু-র গলা।

তবে সেই টেলিফোন কিন্তু দিল্লি থেকে আসেনি। এসেছিল আহমেদাবাদ স্টেশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট-এর ঘর থেকে। আসলে দিল্লি থেকে আহমেদাবাদ এক্সপ্রেস ধরে গান্ধীজির সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল পন্ডিত জওহারলাল নেহেরু, বল্লভভাই প্যাটেল ও ( Mahatma Gandhi Death Anniversary ) মৌলানা আজাদ। তবে কেন এই আসা? হয়তো মহাত্মাজি নিজের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় দিয়ে আগেভাগেই টেড় পেয়েছিলেন। কথোপকথনের শুরুটা হয় জওহারলাল নেহেরু-র মাধ্যম দিয়েই। যুক্তি-তর্ক দিয়ে তিনি মহাত্মাজিকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন মাউন্টব্যাটনের ( Mahatma Gandhi Death Anniversary ) প্রস্তাবিত ‘ভারত-বিভাগ’ স্বীকার করে নেওয়া ছাড়া কোনও পথ নেই। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জেরে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে নিহতের সংখ্যা। অর্ধেক হিন্দু, অর্ধেক মুসলিম। মহাত্মাজি অবশ্য এই বিষয়ে মৌলানা আজাদ ও বল্লভভাই প্যাটেলের মতামত সম্পর্কেও জানতে চাইলেন।

তবে দু’জনের মতামত মন কাড়েনি গান্ধীজির। কারণ, মতে পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছিল তাতে একথা স্পষ্ট যে, ‘ভারত-বিভাগ’ অনিবার্য। যত দেরি হবে ততই বাড়বে মৃত্যুর সংখ্যা। তবে এই দেশ-বিভাগের মতে রাজি নন মহাত্মাজি। যথারীতি তাঁদের ( Mahatma Gandhi Death Anniversary ) যুক্তি শুনে বেঁকে বসেন তিনি। প্রসঙ্গত, ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে দেখলেও জানা যায় গান্ধীজির এই প্রসঙ্গে গড়রাজির কথা। তাঁর সঙ্গে জানা যায়, প্রথমে তিনি এই দেশভাগের ( Mahatma Gandhi Death Anniversary ) বিষয়ে অসম্মতি জানালেও, পরে রাজি হয়ে যান। কিন্তু, তাঁর রাজি হওয়ার পিছনের কারণ এখনও অনেক অস্পষ্ট মানুষের কাছে, দেশের কাছে।

Mahatma Gandhi Death Anniversaryউল্লেখ্য, দেশ-বিভাগ নিয়ে গান্ধীজির প্রতিক্রিয়া তৎকালীন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, “ভারত যদি বিভক্ত হয় তবে তা হবে আমার মৃতদেহের উপর।” আর একপ্রকার তাই হয়েছিল বলা যেতেই পারে। কারণ, দেশ-বিভাগের সাড়ে পাঁচ মাস পর মৃত্যু হয় গান্ধীজির। ফিরে আসা যাক সেই আলোচনায়। কথোপকথনে যখন ( Mahatma Gandhi Death Anniversary ) একটা বড় অংশ দেশ-বিভাগের দিকে। সেই মুহূর্তে বেঁকে বসেন গান্ধীজি। তিনি বলেছিলেন, “এ্যাব লিঙ্কনকে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহকর্মীরা ও জেনারেলরা একই কথা একদিন বলেছিল। কিন্তু আমেরিকাকে দু-টুকরো করে ভাতৃবিরোধের অবসান ঘটাতে চাননি তিনি। প্রাণ দিয়েছিলেন, কিন্তু আমেরিকাকে দু-টুকরো হতে দেননি। আমরাই বা পারব না কেন?” গান্ধীজি ( Mahatma Gandhi Death Anniversary ) প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কংগ্রেসের ছোট ছোট সেবাদল গঠনের। কিন্তু রাজি হননি কেউই। পন্ডিতজি নাকি বলেছিলেন, “বিভাগই এখন একমাত্র স্থায়ী পথ। আপনি যদি এখন আমাদের সঙ্গে একমত না হতে পারেন তাহলে নিরপেক্ষ থাকুন।”

আরও পড়ুন….Gandhiji’s Birth Anniversary: ভারতীয় নোটে গান্ধীজীর ছবি কবে আর কোথায় তোলা হয়েছিল জেনে নিন

এমতাবস্থায় পরিস্থিতি একপ্রকার এগিয়ে যায় তর্ক-বিতর্কের দিকে। কথোপকথনের শেষে মতান্তর কখন যে মনান্তরে পরিণত হয় তা বুঝতে পারেনি কেউই। কিন্তু সেই মতান্তর ও মনান্তরের মাঝেও আটকে যায়নি দেশ-বিভাগ। তিন টুকরো হয়ে যায় দেশ। পূর্ব পাকিস্তান, পশ্চিম পাকিস্তান ও ভারত। দ্বিখণ্ডিত হয় ভারত। কিন্তু হয়তো ( Mahatma Gandhi Death Anniversary ) এই ভারত-বিভাগকে কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারেননি গান্ধীজি। স্বাধীন ভারতে জীবিত থাকেন মাত্র সাড়ে পাঁচ মাস। তারপরই আসে অন্ধকার সময়, তিনটি গুলি বিদ্ধ করে ‘জাতির পিতা’-কে। মৃত্যু হয় সেখানেই।




Leave a Reply

Back to top button