Netaji Subhas Chandra Bose : মূর্তি নিয়ে বাড়ছে তরজা, প্রশংসার মাঝে কটাক্ষের সুর বিরোধীদের

বিগত কয়েকদিন ধরে রাজ্য তথা গোটা দেশের রাজনীতি জুড়েই দেখা যাচ্ছে ক্ষোভের আগুন। গোটা ঘটনার সূত্রপাত, প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন বাংলার নেতাজি ( Netaji Subhas Chandra Bose ) ট্যাবলো বাতিল পড়ার পর থেকেই। নেতাজির ১২৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে এবারের প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হলেও সেখানে থাকবে না বাংলা ট্যাবলো। বঙ্গ সন্তানের জন্মদিনে বাতিল বঙ্গের অংশগ্রহণ। ফলত, প্রথমদিকে রাজ্য জুড়ে ক্ষোভের সূত্রপাত ঘটলেও ধীরে ধীরে সেই আগুন ছুঁয়ে ফেলে জাতীয় রাজনীতিকেও। বিরোধীদের কটাক্ষের মুখোমুখী হতে হয় কেন্দ্র সরকার। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি একপ্রকার হাতের মুঠোয় আনতে ইন্ডিয়া গেটে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু-র মূর্তি বসানোর সিধান্ত নেয় কেন্দ্র সরকার। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি টুইট মাধ্যমে সেই সিধান্ত জানায় দেশবাসীকে।

এই পরিস্থিতিতে আগুন খানিকটা নিভু নিভু হলেও প্রশংসার মধ্যে দিয়েও কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় মোদী সরকারকে। প্রধানমন্ত্রীর সিধান্তকে সহৃদয়ে গ্রহণ করে নিলেও পরমুহূর্তেই কটাক্ষের সুরে তির বিঁধে দেন অনেকেই। নেতাজির ( Netaji Subhas Chandra Bose ) আবেগ নিয়ে রাজনীতি করছে বলে সুর তোলে তৃণমূল কংগ্রেস। সাথে সুর চড়ায় ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে শুরু করে কংগ্রেস ও একাধিক বিরোধী দল।

Netaji Subhas Chandra Boseএদিন তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “নেতাজিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ট্যাবলো বাতিল করেছে কেন্দ্র। উল্টে মূর্তির রাজনীতি করছে। নেতাজি ( Netaji Subhas Chandra Bose ) প্রকৃত সম্মান করে না বিজেপি। যদি সম্মান করতো তাহলে এই ভাবে ট্যাবলো বাতিলের ঘৃণ্য রাজনীতি করত না। এখন মুখ রক্ষা করতে নেতাজির ( Netaji Subhas Chandra Bose ) মূর্তি বসানোর কথা বলছে। আসলে এই সবই নেতাজির আবেগ নিয়ে খেলা করা।”

পাশাপাশি, দমদম লোকসভার তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “নেতাজির( Netaji Subhas Chandra Bose ) স্ট্যাচু বসানো হবে, এটা আনন্দের বিষয়। যে যেখানে নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানাতে যা পদক্ষেপ নেবেন দেশপ্রেমিক বাঙালি হিসেবে তা সমর্থন করি। তাহলে নেতাজির ট্যাবলো বাতিল করছে কেন? নেতাজিকে সমর্থন জানাচ্ছে অথচ অমর জওয়ান জ্যোতি নিভিয়ে দিচ্ছেন কেন?”

আবার এই নেতাজি ( Netaji Subhas Chandra Bose ) স্ট্যাচু ইস্যুতে মুখ খুলতে দেখা গেল, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর নাতি তথা এককালে বিজেপিতে সক্রিয় থাকা চন্দ্র কুমার বসুকেও। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর যে মূর্তি স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র, আমরা তার প্রশংসা করি। কিন্তু আপনি যদি নেতাজিকে সম্মান জানাতে চান, তাহলে সমস্ত সম্প্রদায়কে একত্রিত করে তাঁর অন্তর্ভুক্তিমূলক আদর্শকে বাস্তবায়ন করুন।

Netaji Subhas Chandra Boseবর্তমানে চন্দ্র বসুর এই মন্তব্যে বেশ চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রসঙ্গত, এক সময় বিজেপি ঘনিষ্ঠ চন্দ্র বসু এখন বিজেপির বিরুদ্ধেই সুর তুলেছেন। বলে রাখা ভালো, চন্দ্র কুমার বসু ২০১৬ সালে একবার নরেন্দ্র মোদীর প্রসঙ্গে বলেছিলেন, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ( Netaji Subhas Chandra Bose ) সঙ্গেই নরেন্দ্র মোদীর অনেক মিল রয়েছে।

নেতাজি মূর্তি প্রসঙ্গে এদিন মুখ খুলেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ পাগলের সরকার চলছে। অমর জওয়ান জ্যোতি সরিয়ে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ( Netaji Subhas Chandra Bose ) -কে সম্মান জানানোর কোনও মানে নেই।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এদিন বলেন, “ নেতাজির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠান পালন নিয়ে কেন্দ্রের তরফে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেই কমিটিতে নেতাজির মূর্তি বসানোর কোনও আলোচনাই হয়নি। ২৩ জানুয়ারি জন্মদিন আর তার কিছু আগেই বলছে মূর্তি বসবে।”

উল্লেখ্য, নেতাজি মূর্তি প্রসঙ্গে দুই বাম দল তথা সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লক মুখর হয়েছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “সাধারণতন্ত্র দিবসে নেতাজির ( Netaji Subhas Chandra Bose ) ট্যাবলো বাতিল নিয়ে যে সমালোচনার ঝড় ওঠে তা ধামাচাপা দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। এই ঘোষণার মাধ্যমে তিনি পাপ লঙ্ঘন করতে চাইছেন। আসলে ওঁরা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকেই মুছে দিতে চান।”

প্রসঙ্গত, এই সিধান্তে বেশ খুশি নেতাজি কন্যা। এদিন এই প্রসঙ্গে অনিতা বসু পাফ জানান, খবরটা পেয়ে আমি দারুন খুশি। দিল্লির এমন এক জায়গায় নেতাজির মূর্তি বসানোর সিধান্তকে মন ভালো করা খবর বলে জানিয়েছেন তিনি।

 




Leave a Reply

Back to top button