Netaji Subhash Chandra Bose : পুজো করা হয় নেতাজির স্পর্শ পাওয়া চেয়ারও, সম্মান নাকি অন্ধভক্তি

রাখী পোদ্দার, কলকাতা– আজ সারা দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ( Netaji Subhash Chandra Bose) ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে নেতাজি হলেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। যিনি তাঁর সমগ্ৰ জীবন অতিবাহিত করেছেন দেশকে পরাধীনতার এই বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে। তিনি কেবলমাত্র একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন না, তিনি একাধারে ছিলেন রাজনীতিবিদ ও সেনানায়কও। স্বাধীনতা সংগ্রামের ( Freedom Battle) উদ্দেশ্যে বহুবার বহু সভায় উপস্থিত ছিলেন তিনি। এরকমই এক সভা করতে এসে মঞ্চে তাঁর জন্য রাখা সোফা সরিয়ে সাধারণ এক কাঠের চেয়ারে বসেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ( Netaji Subhash Chandra Bose)। তাঁর স্পর্শ পাওয়া সেই কাঠের চেয়ার আজও পুজো করেন বাঁকুড়ার দেশুড়িয়া গ্রামের নিরঞ্জন কর্মকারের পরিবার। গত ৭২ বছর ধরে সেই আসন পুজো করে আসছেন কর্মকার পরিবারের সদস্যরা।
Netaji Subhash Chandra Bose : বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটির সভা
১৯৪০ সালের ২৮শে এপ্রিল বাঁকুড়ার ( Bankura) গঙ্গাজলঘাটিতে একটি সভায় যোগ দিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ( Netaji Subhash Chandra Bose)। ভিড়ে ঠাসা সেই সভায় নেতাজির জন্য রানিগঞ্জ থেকে সোফা ভাড়া করে এনেছিলেন সেখানকার আয়োজকরা। কিন্তু মঞ্চে উঠে সোফা সরিয়ে পাশে রাখা একটি সাধারণ কাঠের চেয়ার টেনে তাতে বসে পড়েন নেতাজি। সভা শেষ হতেই দেশুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রামরূপ কর্মকার ( Ramrup Karmakar) ছুটে যান মঞ্চে। তাঁর কাছ থেকেই আনা কাঠের চেয়ারে ( Wooden Chair) বসেছিলেন নেতাজি। তাঁর স্পর্শ পাওয়া সেই চেয়ার গর্বের সাথে মাথায় করে নিয়ে আসেন নিজের বাড়িতে রামরূপ বাবু। বাড়িতে এনে ঠাকুরঘরে যত্ন করে রেখে দেন ওই চেয়ার। বাড়ির সকলকে জানিয়ে দেন, ওই চেয়ারে নেতাজি ( Netaji Subhash Chandra Bose) বসেছেন। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় তাতে বসার অধিকার আর কারও নেই।
Netaji Subhash Chandra Bose : কর্মকার পরিবারের পুজো
এর পর কেটে গেছে বহু বছর। সময়ের নিয়মে প্রয়াত হয়েছেন রামরূপ কর্মকার। কিন্তু নেতাজির স্পর্শ পাওয়া সেই চেয়ার আজও আছে কর্মকার পরিবারের ( Karmakar Family) ঠাকুর ঘরে। চেয়ারের উপর রাখা রয়েছে নেতাজির ( Netaji Subhash Chandra Bose) ছবি। আজও প্রতি দিন কর্মকার পরিবারের কূলদেবী মনসা দেবীর নিত্যপুজোর পাশাপাশি ঠাকুরঘরে রাখা চেয়ারে নেতাজির ছবিতে মালা পরিয়ে দেন পরিবারের সদস্যরা। প্রত্যেক দিন ফুল দিয়ে সাজানো হয় চেয়ারটি। প্রয়াত রামরূপ কর্মকারের বড় ছেলে নিরঞ্জন কর্মকার ( Niranjan Karmakar) জানিয়েছেন, ‘‘এই চেয়ারটি দেখতে যতই সাধারণ হোক, আমাদের কাছে তা গর্বের। আজ পর্যন্ত ওই চেয়ারে বসার স্পর্ধা দেখায়নি আমাদের পরিবারের কেউই। আমরা যে ভাবে ওই চেয়ারকে শ্রদ্ধা করে এসেছি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও তাই করে চলেছে। আমাদের বিশ্বাস, নেতাজি আবার কোনও এক দিন ফিরে এসে ওই চেয়ারে বসবেন।’’
আরও পড়ুন : Indian Army : সেনায় চাই বাঙালি রেজিমেন্ট, দাবি তুলে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি Bangla Pokkho-র