বিয়ে করলেই লক্ষ টাকা পেনাল্টি, তাই এই গ্রামের মেয়েরা বেছে নিচ্ছেন বেশ্যাবৃত্তি

রাজস্থানের ( Rajasthan ) মুণ্ডিতে শুরু হয়েছে ‘অপারেশন অস্মিতা’ ( Operation Asmita )। এই অপারেশনের লক্ষ্য নারী কল্যাণ ও নারী উন্নয়ন সাধন। এই অপারেশনের পেছনে বিশাল এক ইতিহাস রয়েছে। যে ইতিহাস নারীদের জন্য বড়ই নির্মম ও বেদনাদায়ক। আসলে আজ থেকে বহুদিন আগে রাজস্থানের মুণ্ডিতে শুরু হয়েছিল তুঘলকি ফরমান। এই ফরমান অনুযায়ী গ্রামের মেয়েরা বিবাহে আবদ্ধ হতে পারবে না। যদি বিয়ে করে তাহলে সেই পরিবারকে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হবে। আর এই নির্মম প্রথার কারণে মেয়েরা বাধ্য হয়েই যৌনকর্মী হিসেবেই জীবন কাটায়। পঞ্চায়েতের এসব কুনীতির জন্য এখানের মেয়েরা বিয়ে করতে পারে না। বিয়ে করলেই সেই পরিবারের মেয়েটিকে ও সমগ্র পরিবারকে নির্মম অত্যাচারের সম্মুখীন হতে হয় ও মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা দিতে হয়। অন্যদিকে যদি কোনও পরিবার টাকা দিতে ব্যর্থ হত সেক্ষেত্রে তাদের উপর অকথ্য শারীরিক অত্যাচার করা হয়। গ্রামের মাতব্বরেরা তাদের লালসা পূরণের লক্ষ্যে গ্রামের অল্প বয়সী মেয়েদের বেশ্যা বানিয়ে যৌনদাসে পরিণত করে রাখে।

আরও পড়ুন……বিয়ে করলেই লক্ষ টাকা পেনাল্টি, তাই এই গ্রামের মেয়েরা বেছে নিচ্ছেন বেশ্যাবৃত্তি

Operation Asmita

একুশ শতকের বুকে দাঁড়িয়ে এই বর্বরতা ও বেআইনি কাজটি বন্ধ করার জন্য তাই জেলা কালেক্টর রেনু জয়পাল একটি অপারেশন চালান যার নাম ‘অপারেশন অস্মিতা’ ( Operation Asmita )। এই অপারেশনের মূল লক্ষ্য হল এই রাজস্থানের মুণ্ডিতে যেসব পঞ্চায়েতে এই কাজগুলো হচ্ছে সেগুলোকে উপযুক্ত প্রমাণ সমেত আটক করা। যারা যারা এসব কাজের ইন্ধন জোগাচ্ছেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা ও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া। রেনু জয়পাল জানান এই অপারেশনটি করতে গিয়ে তিনি অনেক রকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি বললেন এই অপারেশনটি না করলে তিনি মেয়েদের সাথে হতে থাকা এই নির্মম অত্যাচারের কথা জানতেই পারতেন না। কত মেয়ে অকালে নিজেদের প্রাণ হারাচ্ছেন এই প্রথার বলি হয়ে। অনেক বিবাহযোগ্য মেয়ে ও পরিবার কেবলমাত্র নিজেদের সম্মানটুকু বাঁচানোর জন্য আত্মহত্যার মত পথ বেঁচে নিচ্ছেন। এখানেই শেষ নয় গ্রামের কোনও মেয়েকেই শিক্ষা গ্রহণ করতে দেওয়া হত না। যেসব মেয়েরা এই প্রথার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও সোচ্চার তুলেছেন তাদের পঞ্চায়েতের লালসার শিকার হতে হয়েছে।

আরও পড়ুন……ছাত্রীদের থেকে মুখ ফেরালো উচ্চ আদালত, হিজাব বিতর্কের আরও খুঁটিনাটি জেনে নিন বিস্তরে

তবে ‘অপারেশন অস্মিতা’র ( Operation Asmita ) পর থেকেই এই পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। অস্মিতা নারীদেরকে এই অন্ধকার থেকে বার করে আনতে পারছে। রেনু জয়পালের তৎপরতায় এই প্রথার পক্ষে থাকা সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা কড়া হয়েছে। এখন মুণ্ডিতে মেয়েরা সবাই বিয়ে করতে পারছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনের বিয়ে হয়েছে। তারা সুখে সংসার করছে। রেনু জয়পালের লক্ষ্য তিনি সম্পূর্ণ গ্রামকে এই কুপ্রথা থেকে মুক্তি করবেন। তবে পরিস্থিতি এখন আগের থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক।




Leave a Reply

Back to top button