অন্যের বাড়ি বাসন মেজে মেয়েকে মানুষ করেন বাবা! বোর্ড পরীক্ষায় নজর কাড়া নম্বর কৃতী ছাত্রীর

গত দু বছরে সব কিছুই বদলে গিয়েছে। মানুষের জীবনে এক বিরাট পরিবর্তন এসেছে। শিক্ষায় বৈষম্য এসেছে। সত্যি বলতে শুধু শিক্ষাই নয়! সমাজের প্রতিটা ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে এক বিরাট বৈষম্যতা। সৃষ্টি হয়েছে বিভেদ। এক দল নিজেদের পুঁজির জোরে এগিয়ে গিয়েছে, অন্য দল করোনার কোপে কাজ হারিয়ে না চাইতেও সব  নিঃস্ব করে ফেলেছে। এক দল অনলাইন শিক্ষায় গা ভাসিয়েছে, অন্য দল সেই সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে একা নিজের লড়াই চালিয়েছে। 

আর এই লড়াইয়ের পথে হাজার বাধা এলেও থামেনি সুহানীরা। প্রশ্ন জাগতেই পারে, কে এই সুহানী? তাকে নিয়ে এত কীসের মাথা ব্যথা। উত্তর দিতে গেলে বলা যেতেই পারে, এই সুহানী হল আগামীর ভারতবর্ষ। যে হয় তো সকল বাধাকে নিমেষেই নিজের পথের সঙ্গী করে জয়কে ছিনিয়ে নিতে জানে। এই সুহানী হল সেই যে হয় তো গর্বে সঙ্গে বলতে পারে, ‘আমি নারী, আমি পারি’। প্রতিবছরই দেশের সকল রাজ্যেই আয়োজিত হয় মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের মতো জীবনের বড় বড় পরীক্ষা। প্রতিবছরই আমাদের সামনে উঠে আসে একাধিক কৃতী ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু তাঁদের মধ্যে বিশেষ দেখা মেলে না সুহানীদের। 

suhani1

উল্লেখ্য, রাজস্থানের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ( Rajasthan Board Exam Result ) তাক লাগিয়ে দেওয়া ফলাফল করেছে সুহানী শেখড়ওয়াল। খুবই গরীব ঘরের মেয়ে সে। সেই রাজ্যে সমাজে মেয়েদের এমনিতেই পিছিয়ে পড়া হিসাবেই ধরা হয়। রাজস্থানে লিঙ্গ বৈষম্যতা এখনও চরমে। এমন একটি রাজ্যের মেয়ে আজ মাধ্যমিক বোর্ডে শীর্ষে। মোট ৯৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে পিছিয়ে পড়াদের মুখ হয়েছে সুহানী। মেয়েরাও যে তা ভালো ভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছে সুহানী। পেশায় তাঁর বাবা একজন অটো চালক। দিন আনা দিন খাওয়া তাঁদের সংসার। বাড়িতে পড়াশোনা জানাও কেউ নেই। প্রত্যেকটা দিন চলে অর্থ কষ্টের মধ্যে দিয়ে। 

প্রসঙ্গত, করোনাকালে তাঁদের পরিস্থিতি আরও বেহাল হয়ে উঠেছিল। লোকডাউন, সংক্রমণের জেরে মানুষ বন্ধ করেছিল অটো-রিক্সা চাপা। রাজ্যে সর্বত্র ১৪৪ ধারা শেষ করে দিয়েছিল তাঁদের সংসার। পেটের ভাত জোগাতে লোকের বাড়ি বাসন মাজতেন সুহানীর বাবা। কিন্তু হাজার কষ্টের মধ্যেও কখনও থামেনি সুহানীর পড়াশোনা। আজ জীবনের প্রথম পরীক্ষাতেই মারাত্মক ভাবে সফল সে। ভবিষ্যতে দেশের জন্য কাজ করার ইচ্ছা জাহির করেছে সে।




Leave a Reply

Back to top button