নির্বাচনী কাঁসরে ঘুম ভাঙেনি হাথরাস পরিবারের, ভোটগ্রহণের মাঝে আসল ভারতের চিত্র

সকাল সকাল বেজে উঠেছিল নির্বাচনী কাঁসর। মিটল উত্তরপ্রদেশে তৃতীয় দফার ( UP Assembly Election 2022 3rd Phase ) ভোটগ্রহণ পর্ব। মোট ১৬টি জেলা জুড়ে ৫৯টি আসনে হয়েছে ভোটগ্রহণ। মোট ২.১৬ কোটি ভোটারদের হাতে নির্ধারিত হতে চলেছে এই ১৬ জেলার প্রার্থীদের ভাগ্য। বলে রাখা ভালো, এদিন তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ পর্বে অর্ধেক জেলার বিজেপি প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ভর করছে চাষিদের উপর। কারণ, ১৬টি জেলার ৫৯টি আসনের মধ্যে ৩৬টি আসনে আলু চাষিদের প্রভাব ভীষণভাবে। সুতরাং এই ক্ষেত্র বিশেষ সুবিধা ভোগ করার সম্ভবনা বিরোধী দলগুলির দিকেই ভীষণভাবে।
উল্লেখ্য, আজকের দফার সবচেয়ে কারহাল কেন্দ্র। একটা বিরাট সময় ধরে সেখানে নির্বাচনে জয়ী হয়েছে এসপি। তবে একবার তাঁদের দেখতে হয়েছিল হারের মুখ। যাদব পরিবারের ( UP Assembly Election 2022 3rd Phase ) এক শক্ত ঘাঁটি কারহাল কেন্দ্র। শুরু হয় নির্বাচন হাথরাস, ফিরোজাবাদ, ইটা, কাসগঞ্জ, ময়নপুরি, ফারুখাবাদ, কনৌজ, ইটাওয়া, আউরাইয়া, কানপুর দেহাত, কানপুর নগর, জালাউন, ঝাঁসি, ললিতপুর, হামিরপুর এবং মাহোবা এই সকল জেলা জুড়েই চলে ভোট পর্ব।
ঠিক দু’বছর আগে যে হাথরাসের মাটিতে লেগেছিল তাঁর কন্যার রক্তের ছাপ। সেই হাথরাস জুড়ে আজ যেন শান্তির পরিবেশ। সেখানেও বেজেছে নির্বাচনী কাঁসর। তবে কাঁসরের আওয়াজ নাড়াতে পারেনি হাথারাস কন্যার পরিবারকে। প্রসঙ্গত, শান্তিপূর্ণভাবে ( UP Assembly Election 2022 3rd Phase ) ভোটগ্রহণ পর্ব মেটাতে এদিন মোতায়েন করা হয়েছিল আধা-সামরিক। উল্লেখ্য, ভোট এলেই দেশের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা পরিণত হন জনসাধারণের প্রতিনিধিতে। আক্ষরিকভাবে একজন নির্বাচিত নেতা-নেত্রীর কাজই সেটা। কিন্তু নির্বাচনে জয় লাভের পর নিজেদের দায়িত্ব অনেকাংশেই ভুলে যান দেশের অধিকাংশ নেতা-নেত্রীরা। আবার বছর পাঁচেক পর যখন নির্বাচন আসে, তখন সেই পুরানো নেতা-নেত্রীদের দেখা মেলে ( UP Assembly Election 2022 3rd Phase ) জনসাধারণের দুয়ারে। এদিন ঘটে এমনটাই। ভোটগ্রহণের কাঁসর বাজতেই দেশে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিজেপির অধিকাংশ নেতাই ভোট দানের আবেদন করে বসেন জনসাধারণের কাছে।
আরও পড়ুন….তৃতীয় দফার যুদ্ধে তৈরি শাসক-বিরোধী, যাদব ঘাঁটিতে জয় আনতে মরিয়া অখিলেশ
তবে এই তৃতীয় দফার নির্বাচনে একটি সমস্যা নানা বিভিন্ন কেন্দ্রতেই দেখা যায় তা হল ইভিএম ত্রুটি। একাধিক বিধানসভায় ফুটে ওঠে ইভিএম ত্রুটি। তবে এই হাজার ত্রুটির মাঝে দেখা যায় এক অন্যরকম চিত্র। বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ পরিণত হয়েছে সাম্প্রদায়িকতার আখড়ায়। সর্বদা হিন্দু-মুসলিম বিভেদ। কেউ চায় ৮০ শতাংশের ভোট তো কেউ চায় ২০ শতাংশের ভোট। তাহলে কী মরে গেছে ভারতের মানুষের মধ্যে ঐক্য, সাম্প্রদায়িকতার রঙেই কী রেঙে গেছে সকলে। হয় তো না! ফিরোজাবাদের জাসরানার মোস্তফাবাদ ( UP Assembly Election 2022 3rd Phase ) ভোটকেন্দ্রে গণতন্ত্রের ঐক্যের চিত্র সামনে এসেছে। এখানে জাফরান পোশাকে রাজবীর ও শরীফ ভোট দেওয়ার পর একসঙ্গে বেরিয়েছিলেন।
মানুষের বিশ্বাস ভোট হবে শান্তিপূর্ণ ভাবেই। আর সেই বিশ্বাসকেই বাস্তবে রুপান্তরিত করতে মোতায়েন করা হয়েছিল আধা-সামরিক। কিন্তু শান্তিপূর্ণ নির্বাচন যে বেনজির। ঝাঁসির বাবিনা বিধানসভার সিমথ্রি গ্রামে সংঘর্ষে বাঁধল এসপি ও বিজেপি কর্মীরা। বাকবিতণ্ডা থেকে শুরু করে পাথর ছোড়াছুরি। আহত হয়েছেন অনেকে। রাজনৈতিক ( UP Assembly Election 2022 3rd Phase ) সংঘর্ষের মাঝে পড়ে আবার গুরুত্বরভাব আহত হন এক বৃদ্ধা। এছাড়াও, বিজেওয়াইএম-এর জেলা সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ যাদব, হাথরাস জেলার সিকান্দরাউ শহরের মহল্লা গাউসগঞ্জের বাসিন্দা, সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য আলীগড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে তিনি মারা যান। হাথরাসের পাশাপাশি কানপুরেও এক বিজেপি প্রার্থীর দিকে হামলার অভিযোগ ওঠে। সব মিলিয়ে শান্ত উত্তরপ্রদেশ পরিণত হয় এক রণক্ষেত্রে। বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়ে যায় ৬৫.৫৫ শতাংশ।