শ্রীলঙ্কার মতো অর্থ কষ্টে ভুগতে পারে বাংলা, সচিবদের সর্তক ঘিরে শুরু রাজনৈতিক দ্বৈরথ

বিগত কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। একদিকে পাকিস্তান অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা। বিশ্ব রাজনীতির সরগরম পরিস্থিতি চলছে বেশ কয়েকদিন ধরেই। ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কা জুড়ে দেখা গিয়েছে বিরাট অর্থনৈতিক সংকট। দেশ জুড়ে যেন লেগে গেছে মড়ক। খিদের জ্বালায় রীতিমতো অবস্থা হাঁসফাঁস করছে সেই দেশের মানুষজন। তবে পরিস্থিতি এতটাও খারাপ ছিল না রাবণ রাজ্যে। ১০ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধকে কাটিয়ে উঠে যখন সামনের দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছিল তারা। এমতাবস্থাতেই যেন একটা কালো মেঘ অন্ধকারে ঠেলে দিল সেই রাজ্যকে।
নিমিষের মধ্যে আজ যেন সব কিছু শেষের পথে। তবে শ্রীলঙ্কার এই বেহাল দশা ভয় দেখাচ্ছে অর্থনৈতিক সচিবদের। সচিব মহলের মতে, শ্রীলঙ্কার মতো বেহাল দশার মুখোমুখি হতে পারে এই রাজ্যও। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের সচিবদের মতে, পশ্চিমবঙ্গের নানা রকম জনমোহিনী প্রকল্পের ধাক্কায় রাজ্যের কোষাগারের বেহাল দশা হতে পারে। সরকারি সূত্রে দাবি, সপ্তাহান্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের সচিবদের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই মূলত এই প্রসঙ্গটি ওঠে। যার ভিত্তিতে সচিবরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, কিছু সরকার আমজনতার মন জিততে যে ভাবে টাকা খরচ করছে, তাতে খুব শিঘ্রই তাঁদের দশা যে শ্রীলঙ্কার মতো হতে চলেছে এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও পঞ্জাব, দিল্লি, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের কোষাগারের হাল নিয়ে কেন্দ্রীয় সচিবরা উদ্বিগ্ন। ভোটের আগে এই সকল রাজ্যে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা বিনামূল্যে গ্যাস, বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু এখন সেই প্রকল্প পালন করতে গিয়ে রীতিমতো চাপে পড়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকারগুলি।
তবে এই বিষয়ে প্রথমদিকে রাজ্য সরকার মুখ না খুললেও। পরে কেন্দ্র সরকারের দিকে রীতিমতো তোপ দেগে বলে, কেন্দ্রীয় সরকারের সচিবরা কেন্দ্র কোষাগারের দিকে না দেখে রাজ্য কোষাগারের দিকে বেশি তাকিয়ে আছে। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল শিবিরের প্রশ্ন, বিজেপি উত্তরপ্রদেশ, গোয়াতেও বিনামূল্যে গ্যাস সহ নানা জনমোহিনী প্রকল্প দিয়েছে। তা হলে সেই রাজ্যগুলিতে কী রকম চাপ পড়তে চলেছে, সেই নিয়ে কেন্দ্রীয় সচিবরা মুখ খুলছে না যে। অপরদিকে সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ রামগোপাল যাদবের বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় সরকারের হাতেই সরকারি কর্মীদের বেতন দেওয়ার টাকা নেই। শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি জাতীয় স্তরেই হতে পারে। খাদ্য নিগমের ভর্তুকি বাবদ ৪.২৭ লক্ষ কোটি টাকা দু’বছর ধরে বকেয়া পড়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারেরই দেউলিয়া অবস্থা।”
আরও পড়ুন………স্বল্প পোশাকে ওয়ার্ক আউট, ত্রিধার হট ও সেক্সি ট্রাকসুট ঘুম কেড়েছে নেটবাসীর
আরও পড়ুন………রশ্মিকা থেকে ক্রাশ্মিকা! দক্ষিণী হট বম্বের জন্মদিনে মেতেছে নেটপাড়া
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে রাজ্য জুড়ে অস্বস্তি বাড়ছে সরকারি জনস্বার্থ প্রকল্পগুলিকে নিয়ে। নির্বাচনের আগে দেওয়া ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রতিশ্রুতিকে টিকিয়ে রাখতে রীতিমতো ঘাম ছুটে যাচ্ছে সরকারের। চাপ বাড়ছে বাজেটের উপর। তবে শুধুই যে পশ্চিমবঙ্গ এমনটা মোটেই। বিগত কয়েক বছরের জাতীয় ও রাজ্যস্তরিয় রাজনীতি এই সমস্যা ভীষন ভাবে দেখা দিচ্ছে। আমজনতার মন খুশ করতে উন্নয়নের থেকে বেশি জনমোহিনী প্রকল্পের দিকে ঝুঁকছে রাজনৈতিক দলগুলি। যার জেরে চাপ পড়ছে বাজেটে। দিন শেষে আমজনতাকে দেওয়া টাকা কেড়ে নিতে অত্যাধিক শুল্কের মধ্যে দিয়ে।