ওরা শেখাচ্ছে গণতন্ত্রের নয়া পাঠ, নারী শক্তিতেই শক্ত হচ্ছে রাজনীতির ভীত

কোভিড-১৯ এর পর থেকে অনেক ভয়াবহতা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। একদিকে মহামারী শুরু হয়েছে, অন্যদিকে তেমন কিছু ইতিবাচক উন্নয়নও হয়েছে। সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্রে রাজনৈতিক ও নাগরিক জীবনকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে নারীর ক্রমবর্ধমান ভূমিকা ( International Women’s Day)। বৈশ্বিক স্তরে, নারী নেতৃবৃন্দ যেমন জ্যাসিন্ডা আরডার্ন (নিউজিল্যান্ড), সাই-ইং ওয়েন (তাইওয়ান), সানা মারিন (ফিনল্যান্ড) এবং কে কে শৈলজা (কেরল) এর উচ্চতর কর্মক্ষমতা সম্পর্কে ইতিমধ্যেই অনেক কিছু লেখা হয়েছে। কেবল সেই বড় পর্যায়ে নয়, স্থানীয় পর্যায়ের পঞ্চায়েত সরপঞ্চ এবং স্বাস্থ্য আধিকারিকদের অত্যন্ত কার্যকর অবদান যেমন রুরকির দলজিৎ কৌর, সিংওয়াহিনির রিতু জয়সওয়াল এবং নেপালের চন্দননাথ, কান্তিকা সেজুয়ালও নাম লিখিয়েছেন মহীয়সীর খাতায়। এদিকে বর্তমানে দক্ষিণ এশীয় গণতন্ত্রের প্রহসন হল কার্যনির্বাহী কেন্দ্রে শক্তিশালী মহিলা নেতৃবৃন্দের অব্যাহত উপস্থিতি এবং অন্যদিকে সমাজে মহিলাদের ভয়ঙ্কর পরিণতি ( International Women’s Day)। 

International Womens Dayএকটু গবেষণা করলেই দেখা যাবে, বিশ্বের যেকোনো অঞ্চলের চেয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বাধিক সংখ্যক নারী রাষ্ট্রপ্রধান রয়েছেন — যার মধ্যে সিরিমাভো বন্দরনায়েকে, চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা, ইন্দিরা গান্ধী, খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা এবং বেনজির ভুট্টো। কিন্তু এই চিত্রের পাশেই উঠে আসে নির্বাচনী প্রতিনিধিত্বে মহিলা স্বশক্তিকরণ ( International Women’s Day) এবং অঞ্চল ভিত্তিক সাধারণ মহিলাদের সামাজিক অবস্থা। যদিও নারীরা কেবল ক্ষমতার উচ্চস্তরেই নয় সামাজিক আন্দোলনগুলিতেও ( যেমন সিএএ বিরোধী আন্দোলন) তৃণমূলস্তরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। রাজনৈতিক দলগুলিতে ও ইচ্চ থেকে নিম্ন সব পদেই মহিলারা নিজেদের প্রমাণ করেছেন।

নির্বাচনী প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে মহিলাদের সংসদীয় উপস্থিতির বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং-এ ভারত  কিন্তু বেশ কয়েকটি পর্যায়ে নেমে এসেছে। ভারত বর্তমানে পাকিস্তানেরও পিছনে। পাকিস্তানে মহিলা সাংসদের সংখ্যা ১০৬, বাংলাদেশে  ৯৮ এবং নেপালে ৪৩ এবং এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা ১৮২। ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে, ক্যারল স্পারি এবং এসএম রাইয়ের মতো পণ্ডিতরা অনুমান করেছিলেন যে ভারতে লোকসভায় ৩৩% মহিলা সাংসদের উপস্থিতি আরও 40 বছর সময় লাগবে ( International Women’s Day)। 

১৯৬২ সালে, ভারতে পুরুষ ভোটারদের হার মহিলাদের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি ছিল। ছয় দশক পরে, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে, মহিলাদের অংশগ্রহণ প্রথমবার পুরুষদের ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এটিই মহিলাদের মধ্যে নাগরিকত্বের অধিকারের ক্রমবর্ধমান দাবির ইঙ্গিত। নারী ভোটারদের ক্রমবর্ধমান ভোটদান রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচিগত অগ্রাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে। যৌন হয়রানি এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা সহ নারী ( International Women’s Day) ভোটারদের আগ্রহ, পছন্দ এবং উদ্বেগের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলি ভাবতে বাধ্য হয়। 

International Womens Dayএই ২০২১ সালের আমাদের রাজ্য, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের সময় আমরা দেখেছি উঠে এসেছে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প। এখানেই শেষ নয়।  ‘স্বাস্থ্য সাথী’ প্রকল্পের কার্ড হয়েছে বাড়ির মহিলাদের নামে। এছাড়াও কন্যাশ্রী – রূপশ্রীর মত  মেয়েদের শিক্ষা এবং বিবাহের জন্য আর্থিক সহায়তাও প্রদান করছে সরকার। এগুলি আদতে অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রমাণিত হয়েছে৷ আবার কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যাবে মহিলা স্বশক্তিকরন ( International Women’s Day) কেবলমাত্র যে রাজনৈতিক দলগুলির দ্বারাই সীমাবদ্ধ, তা নয়। পাকিস্তানে আওরাত মার্চ আবার ভারতের শাহীনবাগের বিক্ষোভ, এইসব সামাজিক আন্দোলন নারীদের একত্রিত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে সক্রিয় প্রমাণিত হয়েছে। 

বিজেপি ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করানোর কথা ছিল। কিন্তু তা আজও আলোচনা উপেক্ষিত। আবার অন্যদিকে মহিলাদের সংসদে উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য পশ্চিম বাংলার মমতা ব্যানার্জি এবং ওড়িশ্যার নবীন পট্টনায়কের সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অবশ্যই অন্যান্য ভারতীয় রাজ্যগুলির জন্য অনুপ্রেরণা। তাই গনতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এগিয়ে আসতে হবে নারীকেই। কারন, ‘নারীই শক্তি’। 

আরও পড়ুন- কাটরিনা থেকে আনুষ্কা, একে অপরের পাশে দাড়িয়ে নজির গড়েছেন এই অভিনেত্রীরা, দেখে নিন লিস্ট

আরও পড়ুন- যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন নিয়ে গর্জে উঠলেন বিশ্ববিখ্যাত মহিলা তারকারা, একঝলকে মহীয়সীরা




Leave a Reply

Back to top button