সমুদ্রে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, ঘাটে ভিড়লেন জেলেরা, নদী থেকে ফিরতে হল খালি হাতেই

জেলেদের মুখে হাসি। পরিশ্রম সফল। সরগরম মাছের আড়ত। কিন্তু ক্রেতাদের মুখ ভার।

সাগরে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। জেলেদের মুখে হাসি। পরিশ্রম সফল। সরগরম মাছের আড়ত। কিন্তু ক্রেতাদের মুখ ভার। দামের ছ্যাঁকায় পকেটে অস্বস্তি। রুপোলি শস্যে ঝিলমিল লেগে যাওয়ার যোগাড়।

৬৫ দিন সমুদ্রে কাটিয়েছেন জেলেরা। চষে বেরিয়েছেন বঙ্গোপসাগর। প্রায় দু’মাস পর ফিরেছেন ঘাটে। সঙ্গে ইলিশ। পটুয়াখালিতে দুটি বড় মাছের আড়ত – আলিপুর ও মহিপুর ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরগরম। চট্টগ্রাম, ভোলা, চাঁদপুর, বাঁশখালী, পাথরঘাটা, কক্সবাজার থেকেও ট্রলার এসেছে। ইলিশের মতোই ঝাঁকে ঝাঁকে।

আলিপুরে মাছ বিক্রি করতে আসা এক মাঝি বললেন, ‘৮ দিন আগে সমুদ্রে গিয়েছিলাম। ব্যাপক ইলিশ পেয়েছি। গত এক বছরে এত পাইনি। প্রায় ২০ লাখ টাকার উপর দাম হবে’। ২-৩ মাস আগে আরও একবার সাগরে গিয়েছিলেন। বললেন, ‘তখন প্রায় ১০ লাখ টাকার লোকসান হয়েছিল। খারাপ আভাওয়ার কারণে মাছ না ধরেই ফিরে আসি। ঋণ শোধ করতে পারিনি। এবার পুষিয়ে দেব’।

সমুদ্রের ইলিশ উঠলেও নদী ফাঁকা। ইলিশ নেই। জেলেদের হাসি চওড়া হচ্ছে কই! তাঁরা বলছেন, ‘সমুদ্রে পাচ্ছি ঠিকই। কিন্তু নদী থেকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। সমুদ্রের ইলিশে সেই স্বাদ নেই। ফলে টাকা উঠছে না’।

Hilsa Fish,Bangladesh,Sea

এই অবস্থা চলতে থাকলে অনেক জেলেকেই পেশা বদলাতে হবে। আশঙ্কা জেলেদের। সাগরে একটা বোট দৈনিক ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকার ইলিশ ধরে। কিন্তু নদীর ইলিশেই আসল মজা। স্বাদে, টাকাতেও। জেলেরা বলছেন, মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় ইলিশের দেখা মেলেনি। তবু অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু হতাশ হয়েই ফিরতে হয়েছে।

তবে আড়তদাররা বলছেন, সাগরের ইলিশ কিছুটা চাহিদা মেটাবে। জেলেদের পকেট ভরবে। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন দরকার। কারণ তেলের দাম একলাফে ১১৪ টাকা লিটার হয়েছে। এটা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

কেন নদীতে ইলিশ নেই? ইলিশ সাগরের মাছ। ডিম পাড়ার জন্য নদীতে আসে। মিষ্টি জলের কারণে। কিন্তু নদীর জলও এখন লবণাক্ত। তাই সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ থাকলেও নদীতে নেই। তবে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে নদীতেই ইলিশ মিলবে বলে আশা জেলেদের।




Leave a Reply

Back to top button