এক ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী হলো বাংলাদেশ
নর্থ-ইস্টার্ন রেলওয়ের কিষাণগঞ্জ ডিভিশনে একটি মালবাহি গাড়ির সঙ্গে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের।

বাংলাদেশ: এক ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী হলো বাংলাদেশ। নর্থ-ইস্টার্ন রেলওয়ের কিষাণগঞ্জ ডিভিশনে একটি মালবাহি গাড়ির সঙ্গে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। ভৈরব এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। জানা গিয়েছে, সোমবার বেলা সাড়ে তিনটের সময় চট্টগ্রামের দিকে যাওয়া মালগাড়িটিকে ধাক্কা মারে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া যাত্রীবাহী গোধূলি এক্সপ্রেসকে। এমনকি উল্টে যায় যাত্রীবাহী বগিও।
আপাতত মৃতের সংখ্যা ২০ বলেই জানা গেছে। কারণ অনেক মানুষ ট্রেনের ধ্বংসস্তুপের তলায় আটকে আছে। সুতরাং মনে করা হচ্ছে এই মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দেহ উদ্ধারের জন্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশ দমকল বাহিনীর বহু কর্মী নেমে পড়েছে। এছাড়াও ক্রেনও আনা হয়েছে ট্রেনের উল্টে যাওয়া বগি সরাতে। পাশাপাশি, ১০০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে৷ তবে এই দুর্ঘটনাকে ঘিরে নালিশ রয়েছে বহু লোকের। তাঁদের বক্তব্য, নিম্নমানের সিগন্যালিং ও দেখাশোনার অভাবে এরকম দুর্ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে বাংলাদেশে। শেষ বছরে ১৭৫ জনের মৃত্যু হয় ট্রেন দুর্ঘটনায় এবং ১৪৫ জন লেভেল ক্রসিং করতে গিয়ে মারা যায়।
এই দুর্ঘটনা সম্বন্ধে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের বক্তব্য, “এখনও অবধি আমরা ২০টি মৃতদেহ উদ্ধার করতে পেরেছি। তবে এখনো অনেক দেহ চাপা পড়ে রয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি এই মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।” অন্যদিকে এই বিষয়ে ঢাকা বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা নাজমুল ইসলাম জানিয়েছেন, “ঢাকার দিকে যাচ্ছিল ট্রেনটি। বিকেল চারটে নাগাদ ভৈরব স্টেশনের আউটারে ট্রেনের পিছনে ধাক্কা মারে একটি মালবাহী ট্রেন। যে মালবাহী ট্রেনটি যাচ্ছিল চট্টগ্রামের দিকে। সেই দুর্ঘটনার জেরে কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। উলটে যায় একাধিক বগি।”
উল্লেখ্য, এর আগে বাংলাদেশে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছিল টঙ্গিতে ১৯৮৯ সালের ১৫ জানুয়ারি। সেই সময়ে ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় অন্তত ১৭০ জনের। আহত হয় আরও ৪০০ জনের মতো যাত্রী। এছাড়াও ১৯৮৩ সালের ২২ মার্চ ঈশ্বরদীর কাছে কয়েকটি স্প্যান ভেঙে পড়ে একটা রেল সেতু পার হওয়ার সময়। নিচে শুকনো জায়গায় গিয়ে পড়ে ট্রেনের কয়েকটি বগি। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় অন্তত ১০০ জনের মতো যাত্রী।